কর্ম ও অভিপ্রায়..... ফেসবুক। নামটা শুনেই চাঙ্গা হয়ে বসলেন নাকি
.........কর্ম ও অভিপ্রায়.....
ফেসবুক। নামটা শুনেই চাঙ্গা হয়ে
বসলেন নাকি? আসলেই নগর
জীবনে এমনকি এর বাইরেও এখন
ফেসবুকের পরিধি ব্যপ্ত। উঠতে
বসতে ফেসবুক। জ্যামে বসে
ফেসবুক- “উফ্! ১ ঘণ্টা যাবত বসে আছি
– একটা গাড়িও নড়ে না”; ঘুম থেকে
উঠে ফেসবুক- “গুড মর্নিং, ব্রাশের
ওপর পেস্ট লাগাচ্ছি”; মিটিং এ বসে
ফেসবুক- “বোরিং মিটিং :(”;
রেস্টুরেন্ট এ ঢুকে “চেক ইন” করা,
কিছু করার না থাকলে ফেসবুকে
গুঁতোগুঁতি, ফার্মভিল-ক্রিমিনাল কেস না
খেললে তো “দোস্ত, তুই বাসায়
গিয়ে করস টা কি?” ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার
কেউ কেউ তো অনেক বেশি
অ্যাক্টিভ, ফেসবুক এর মাধ্যমে দিন
দুনিয়ার খবর রাখে। যেমন- “এই
শুনেছিস? ফাহিম আর আনিকার ব্রেক
আপ হয়ে গেসে?” “তোকে কে
বলল? আমি তো কালকেই দেখলাম
ইটস কমপ্লিকেটেড”, “আরে এটার
মানেই তো ঐ ব্যাপার- পেজগি লাগসে
বুঝছিস!” কেউ স্ট্যাটাস দিলো “এক
পায়ে নূপুর আমার অন্য পা খালি…”, ব্যস!
অপরিচিত আগন্তুক এসে পোক
করলো, আরেকজন মেসেজ
দিলো “হাই, বন্ধু হবে? নাম্বার………”
ইত্যাদি ইত্যাদি। ফেসবুক এর উপর
লিখতে চাইলে অনেক বড় একটা
গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয়া যাবে।
তাই আর ঐ বৃত্তান্তে না যাই।
ফেসবুকের অথবা সঠিকভাবে বলতে
চাইলে এর ব্যবহারকারীদের মূল
উদ্দেশ্য হল একে অপরের সাথে
যোগাযোগ বজায় রাখা। তবে এর
উন্নতি আর ব্যপ্তি সাথে সাথে
আমাদের চাহিদামাফিক পরিবর্তনের জন্য
অনেক কিছুই এখন করা সম্ভব। আমরাও
আমাদের ব্যস্ত জীবনের সাথে তাল
মেলানোর জন্য সহজ ও
উপযোগী মাধ্যম হিসেবে
ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করি।
ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, সংগঠন, ব্যাক্তিগত
দল ইত্যাদি খুব সহজলভ্য। পক্ষান্তরে,
এর বহুমুখী ব্যবহারের পাশাপাশি কিছু
ছোটবড় দুর্ঘটনাও কিন্তু ঘটছে। এবং
কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব ঘটনার প্রভাব
সুদূরপ্রসারী।
হিমাদ্রি। নামটাতে কেমন একটা কবি কবি
ভাব আছে। তার নামের প্রেমেই
অনেক মেয়ে স্বপ্নের জ্বাল
বোনে। দেখতেও সে বেশ ভাল,
আকর্ষণীয় বাক্তিত্ব। যাকে বলে
প্রেম করার জন্য উপযুক্ত ছেলে।
প্রতিদিন গোটা দশেক মেয়ে বন্ধু
হবার আহ্বান জানায় তাকে ফেসবুকে।
সে তাদের বন্ধু বানায়ও, তবে কি
মনের মত একজন না হলে তো আর
প্রেম করা যায় না। একদিন খুব মিষ্টি
চেহারার এক মেয়ে তার বন্ধু হয়।
এরপর শুরু হয় তাদের গল্প, হাসি, মনের
ছন্দ মেলানো। খুব সুন্দর কাটছিল
দিনগুলো। দুজনেই ছাত্র হওয়ায়
জীবনের বাস্তবতা আর জটিলতা তাদের
স্পর্শ করছিল না তেমন। হিমাদ্রি মনে
মনে ভাবছিল, অনেক তো হল। এবার
না হয় দেখা করা যাক, মনের ভেতরের
সবটুকু অনুভুতি বলে ফেলা যাক তাকে।
প্রস্তাব পৌঁছল মিষ্টি মেয়ের কাছে-
কিন্তু তার উত্তরটা ছিল অভাবিত। মেয়েটা
বলল- দেখ হিমাদ্রি, আমরা কি শুধু বন্ধু
থাকতে পারি না? এর চেয়ে বেশি কিছুর
আগ্রহ আমার নেই।
হিমাদ্রি প্রথমে আহত হল- তাহলে
এতদিনের সবকিছু কী ছিল! কিন্তু পরে
সে দমে না গিয়ে সিদ্ধান্ত নিল যে
দেখা করবে এবং ওকে বোঝাবে।
হয়তোবা ও ভয় পাচ্ছে, হয়তোবা
অন্য কোন সমস্যা। ফোনে কথা
অবশ্য এর পরেও বন্ধ হয়নি, ফাঁকে
ফাঁকে হিমাদ্রি জেনে নিল কোথায়
থাকা
হয়। কিন্তু কোনভাবেই মেয়েটা আর
আগের মত মিশছে না। হিমাদ্রিও ছাড়ার
পাত্র না। শেষমেশ একদিন মেয়েটা
রাজি হল, বাসার ঠিকানায় আসার জন্য বলল।
হিমাদ্রি যথারীতি সেই কাঙ্খিত দিনের
জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিল এবং সময়মত
গিয়ে হাজির হল তার স্বপ্নের নায়িকার
বাড়িতে।
দরজা খুললেন একজন বয়স্কা ভদ্রমহিলা।
খুলেই প্রশ্নঃ তুমিই হিমাদ্রি? হিমাদ্রি
মনে
মনে ভীষণ খুশি হল, তার সম্পর্কে
তাহলে এই বাড়ির লোকজন জানে।
সে হাসিমুখে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিয়ে
বাড়িতে প্রবেশ করলো।
অপেক্ষা তো আর সইছেনা, ও কখন
আসবে? বসার ঘরেই কি বসিয়ে
রাখবে নাকি? হাতে কিছু নাস্তা নিয়ে ঐ
ভদ্রমহিলা ঢুকলেন ঘরে। হিমাদ্রির
চোখ খোঁজে অন্য
আরেকজনকে। ইনি কী ওর মা?
“তোমার কথা শুনেছি। তোমরা দুজন
অনেক ভালো বন্ধু না?” সে কী!
উনার কণ্ঠটা পুরাই ওর মত। মা মেয়ের
এত মিল! “জ্বি, ও কোথায়?” “তুমি তো
কিছুই খাচ্ছনা দেখি! উত্তেজনার
চোটে কি খাওয়াও বাদ দিলে নাকি?
তোমার প্রিয় পায়েস তো রেঁধেছি!”
হিমাদ্রি কেমন থমকাল, উনি এত কিছু
কিভাবে জানেন? আর ওই বা আসছেনা
কেন? একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
“জ্বি নিচ্ছি, ইয়ে মানে ওকে একটু
ডেকে দিবেন প্লীজ?”
ভদ্রমহিলা কিছুক্ষণ চুপ হয়ে বসে
রইলেন। তারপর আস্তে আস্তে
বললেন, “তুমি কি এখনও কিছু বুঝতে
পারছ না?”
“মানে?” হিমাদ্রি ওনার চোখের দিকে
তাকিয়ে থাকে। চোখের পানি গড়িয়ে
পড়ছে ওনার গালে।
“আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি
হিমাদ্রি, তোমাকে ডেকে আনাটা
আমার ঠিক হয়নি। কিন্তু তুমি যে কিছুতেই
হাল ছাড়ার পাত্র নও!” মহিলার গলায়
অভিমান!
সবকিছু এলোমেলো লাগছে এখন
হিমাদ্রির কাছে। “আপনিই কি……?”
“তাহলে যার নাম নিয়ে কথা বলতেন
সে কে?”
“কেউ না। আমি একা, নিঃসঙ্গ। সবাই
থেকেও আমার কেউ নেই। কথা বলার
ফুরসত কারও নেই আমার সাথে।
তোমার সময় আছে, আমাকে সময়
দিতে, আমি আবার সেই আগের দিন
গুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম!” বলেই
হু হু করে কেঁদে ফেললেন মহিলা।
হিমাদ্রি কি বলবে বুঝতে পারছেনা,
বুকের ভেতরটা মোচড় দিচ্ছে।
কেন আমার সাথে এরকম হল! কেন?!
সিলভি। খুব সহজ সরল একটা মেয়ে,
সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে বসে।
পরিচিত গণ্ডির যেই অনুরোধ জানায়,
তাকেই বন্ধু বানিয়ে ফেলে। একদিন
সে হোম পেজ দেখতে
দেখতে একটা ছবির অ্যালবাম
দেখতে পেল। অ্যাকাউন্টের
মালিককে সে চেনেনা, কিন্তু কেন
জানি ছবিগুলো পরিচিত লাগছে। অ্যালবাম
এ ঢুকেই সে আশ্চর্য- এ ছবিগুলো
তো তারই! অদ্ভুত তো!
“সমস্যা কি আপনার? আপনি আমার অনুমতি
না নিয়ে আমার অ্যালবাম এর ছবি দিব্যি
নিজের অ্যালবামে পোস্ট করে
দিয়েছেন?” এরকম একটা মেসেজ
পাঠাল সেই ছেলেটাকে।
উত্তর এলো, “আপনি এত উত্তেজিত
হচ্ছেন কেন? মানুষ কি অন্য মানুষের
ছবি ব্যবহার করতে পারে না? তারকাদের
ছবি তো সবাই ব্যবহার করে। তাতে কি
কারো আসে যায়?”
সিলভি তো উত্তর পড়ে হতবাক! দুঃখিত
হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো
আমাকেই বোঝাচ্ছে? মানুষের কি
বিবেকবোধ নেই হয়ে যাচ্ছে নাকি?
লোকটাকে রিপোর্ট করল সে।
কয়েকদিন পর অবশ্য ঘটল আরেকটা
ব্যাপার- সেই অ্যালবামের জন্যই কিনা
কে জানে, সুদর্শন প্রোফাইল
পিকধারী এক ছেলে তার বন্ধু হল।
মনে মনে সিলভি অনেক খুশি হল ঠিকই,
কিন্তু ভাব নিল এমন যেন ঐ ছেলের
প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। এর পরও
কয়েকদিন কথা হল। তার সাথে কথা
বলতে সিলভির মন আনচান করত।
এভাবে চলছিল। ফোনেও কথা হতে
লাগল। সিলভি স্বপ্নে ভাবে এমন সুন্দর
একজন জীবনসঙ্গী যদি সারাজীবন
তার সাথে থাকত! ইশ! জীবনটাই ধন্য!
তো একদিন সেই ছেলে তাকে
বলল- আমার আরেকটা অ্যাকাউন্ট
আছে, আমি তোমাকে সেখান
থেকেও রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছি।
সেরকম কোন অ্যাকাউন্ট থেকে
কোন রিকোয়েস্ট সিলভি খুঁজে
পেল না। তবে একই নামে ভিন্ন
প্রোফাইল পিকবিশিষ্ট আরেকজনের
রিকোয়েস্ট দেখল সে।
ছেলেটাকে ব্যাপারটা বলতেই সে যা
বলল তা সিলভির বিশ্বাস করতে কষ্ট
হচ্ছিল। এটাই ঐ “সুদর্শন যুবকের”
আসল চেহারা। আর যার ছবি তার আগের
অ্যাকাউন্টে দেওয়া, সে একজন
বিদেশী মডেল। নিজের বাহ্যিক
সৌন্দর্য দিয়ে মেয়েদের সে
আকৃষ্ট করতে পারত না। তাই এই বিকল্প
ব্যবস্থা গ্রহণ আর কি! সিলভির সাথে কথা
বলে তার মনে হয়েছে যে তাকে
বিশ্বাস করা যায় তাই সে তাকে সত্যি
কথাটা জানিয়েছে।
সিলভি আর কথা বাড়ায় নি। ওখানেই তার
স্বপ্নের ক্ষান্ত দিয়েছে।
আচ্ছা, নিজেকে প্রশ্ন করুন তো,
কেন এসব ঘটনা ঘটছে? ফেসবুক
এমন একটা জিনিস- অন্য প্রায় সবকিছুর
মত যাকে আমি চাইলে গঠনমূলক, ভাল
কাজে ব্যবহার করতে পারি। আবার
চাইলে নেতিবাচক বা খারাপ কাজেও
করতে পারি। এর পেছনে মূল
চালিকাশক্তি হচ্ছে আমার “উদ্দেশ্য”।
ফেসবুকের ইতিবাচক দিক অনেক,
কিন্তু এর কয়েকটা নেতিবাচক দিকের
প্রতিও না তাকালেই নয়। যেমন- কথায়
কথায় মানুষের সমালোচনা করা, অন্য
কারো দোষ খুঁজে বেড়ানো,
অন্যকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলা,
অকারণে কষ্ট দেয়া, সম্মান না করা,
নিজের বড়াই করা, গীবত করা, নিজের
স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে প্রতারণা,
মিথ্যা
কথা বলা, অশ্লীল কথা বলে তাকে
“প্রাপ্তবয়স্কদের কৌতুক” হিসেবে নাম
দেয়া ইত্যাদি দিন দিন কেমন যেন একটা
ফ্যাশন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা হয়ত
অনেকে বুঝতেও পারছিনা যে
এগুলো সাধারণ নৈতিক মূল্যবোধের
পরিপন্থী। এর কোনটার জন্যই
ফেসবুক প্রত্যক্ষভাবে দায়ী নয়,
দায়ী ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য বা
অভিপ্রায়।
চলুন, প্রথমে আমি নিজেকে প্রশ্ন
করি, আমি কি এগুলোর সাথে জড়িত?
আমি কি মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছি? আমার
আচরণে কি অন্য কেউ কষ্ট পাচ্ছে?
{অায়াত:
“মুনাফেক নর-নারী সবারই গতিবিধি
একরকম; শেখায় মন্দ কথা, ভাল কথা
থেকে বারণ করে এবং নিজ মুঠো
বন্ধ করে (কৃপণতা প্রদর্শন করে)।
আল্লাহ্কে ভুলে গেছে তারা,
কাজেই তিনিও তাদের ভুলে
গেছেন…।”(১)}
“তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে
মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বেও
সত্যকে তোমরা গোপন করো
না।”(২)}
দেখুন, আমরা অনেকেই মুসলিম। কিন্তু
মুসলিম নামধারী হয়ে নিজের নামের
কলঙ্ক বাড়াচ্ছি নাতো? আল্লাহ যে
আমাকে সতর্ক করে দিলেন? বারবার
ভুলে যাই। কিন্তু বারবার মনেও তো
করা যায় তাই না? চলুন না আমি আপনি
মিলে
একটু চেষ্টা করি। একদিন দেখব ইন শা
আল্লাহ আমি ঠিকই পারব। আপনিও
পারবেন। শুধু শুধু এই জীবন আর মৃত্যু
পরবর্তী জীবনের বোঝা বাড়িয়ে
লাভ আছে কি?
কেউ হয়ত বলবেন, “আরে ভাই এসব
মুখেই বলা যায়, এত কিছু করতে
গেলে তো জীবনে কিছু করতেই
পারব না। খালি আফসোস করব আর মানুষ
আমাকে বেচে খাবে। আর আমার
জীবনে কি সাধ আহ্লাদ বলে কিছু
নাই?” কিন্তু তাই যদি হয়, তাহলে যখন
কেউ আমার ক্ষতি করে বা আমার নামে
বাজে কথা বলে তখন তাকে কিছু বলার,
এমনকি কষ্ট পাওয়ারও অধিকার আমার
আছে কি? তখন কেন আমার সব
বিবেক বোধ জাগ্রত হয়? কারণ তখন
আমি ভুক্তভোগী, আসামী না। আর
কেন ভাবছেন যে এসব না করলে
জীবনে সুখের স্বাদ পাওয়া যায় না!
এটুকু বলতে পারি যে রাতে আপনি
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন, আর যদি
কিছু নাও পারেন। সুস্থ নৈতিকতা আর
মূল্যবোধের অনির্বচনীয় এক
ধরণের প্রশান্তি আছে। দ্বিতীয়ত,
জীবন সম্পর্কে আমাদের
পরিপ্রেক্ষিত আসলে কিরকম হওয়া
উচিত?
{অায়াত:
“তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন
ক্রীড়াকৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক
অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য
ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক
বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল
কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা
শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে
পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা
খড়কুটো হয়ে যায়। আর পরকালে
আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও
সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার
উপকরণ বৈ কিছু নয়।”(৩)}
আর কিছু বলার প্রয়োজন আছে কি?
আপনি স্বয়ং আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পাচ্ছেন।
কাজেই আপনাকে আহবান জানাই আমার
এই প্রচেষ্টায়। আমি চেষ্টা করছি, আর
আল্লাহর উপর ভরসা রাখছি- কারণ তাঁর
সাহায্য ছাড়া আমি অসহায়। সাড়া দেবেন
কি? অপেক্ষায় রইলাম। মনে রাখবেনঃ
{অায়ত:
“তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং যা
প্রকাশ করে, আপনার পালনকর্তা তা
জানেন।”(৪)}
***
ফুটনোটঃ
১. সূরা আত-তাওবাহ, ৯:৬৭
২. সূরা বাকারাহ, ২:৪২
৩. সূরা হাদীদ, ৫৭:২০
৪. সূরা আল-কাসাস, ২৮:৬৯
ফেসবুক। নামটা শুনেই চাঙ্গা হয়ে
বসলেন নাকি? আসলেই নগর
জীবনে এমনকি এর বাইরেও এখন
ফেসবুকের পরিধি ব্যপ্ত। উঠতে
বসতে ফেসবুক। জ্যামে বসে
ফেসবুক- “উফ্! ১ ঘণ্টা যাবত বসে আছি
– একটা গাড়িও নড়ে না”; ঘুম থেকে
উঠে ফেসবুক- “গুড মর্নিং, ব্রাশের
ওপর পেস্ট লাগাচ্ছি”; মিটিং এ বসে
ফেসবুক- “বোরিং মিটিং :(”;
রেস্টুরেন্ট এ ঢুকে “চেক ইন” করা,
কিছু করার না থাকলে ফেসবুকে
গুঁতোগুঁতি, ফার্মভিল-ক্রিমিনাল কেস না
খেললে তো “দোস্ত, তুই বাসায়
গিয়ে করস টা কি?” ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার
কেউ কেউ তো অনেক বেশি
অ্যাক্টিভ, ফেসবুক এর মাধ্যমে দিন
দুনিয়ার খবর রাখে। যেমন- “এই
শুনেছিস? ফাহিম আর আনিকার ব্রেক
আপ হয়ে গেসে?” “তোকে কে
বলল? আমি তো কালকেই দেখলাম
ইটস কমপ্লিকেটেড”, “আরে এটার
মানেই তো ঐ ব্যাপার- পেজগি লাগসে
বুঝছিস!” কেউ স্ট্যাটাস দিলো “এক
পায়ে নূপুর আমার অন্য পা খালি…”, ব্যস!
অপরিচিত আগন্তুক এসে পোক
করলো, আরেকজন মেসেজ
দিলো “হাই, বন্ধু হবে? নাম্বার………”
ইত্যাদি ইত্যাদি। ফেসবুক এর উপর
লিখতে চাইলে অনেক বড় একটা
গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয়া যাবে।
তাই আর ঐ বৃত্তান্তে না যাই।
ফেসবুকের অথবা সঠিকভাবে বলতে
চাইলে এর ব্যবহারকারীদের মূল
উদ্দেশ্য হল একে অপরের সাথে
যোগাযোগ বজায় রাখা। তবে এর
উন্নতি আর ব্যপ্তি সাথে সাথে
আমাদের চাহিদামাফিক পরিবর্তনের জন্য
অনেক কিছুই এখন করা সম্ভব। আমরাও
আমাদের ব্যস্ত জীবনের সাথে তাল
মেলানোর জন্য সহজ ও
উপযোগী মাধ্যম হিসেবে
ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করি।
ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, সংগঠন, ব্যাক্তিগত
দল ইত্যাদি খুব সহজলভ্য। পক্ষান্তরে,
এর বহুমুখী ব্যবহারের পাশাপাশি কিছু
ছোটবড় দুর্ঘটনাও কিন্তু ঘটছে। এবং
কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব ঘটনার প্রভাব
সুদূরপ্রসারী।
হিমাদ্রি। নামটাতে কেমন একটা কবি কবি
ভাব আছে। তার নামের প্রেমেই
অনেক মেয়ে স্বপ্নের জ্বাল
বোনে। দেখতেও সে বেশ ভাল,
আকর্ষণীয় বাক্তিত্ব। যাকে বলে
প্রেম করার জন্য উপযুক্ত ছেলে।
প্রতিদিন গোটা দশেক মেয়ে বন্ধু
হবার আহ্বান জানায় তাকে ফেসবুকে।
সে তাদের বন্ধু বানায়ও, তবে কি
মনের মত একজন না হলে তো আর
প্রেম করা যায় না। একদিন খুব মিষ্টি
চেহারার এক মেয়ে তার বন্ধু হয়।
এরপর শুরু হয় তাদের গল্প, হাসি, মনের
ছন্দ মেলানো। খুব সুন্দর কাটছিল
দিনগুলো। দুজনেই ছাত্র হওয়ায়
জীবনের বাস্তবতা আর জটিলতা তাদের
স্পর্শ করছিল না তেমন। হিমাদ্রি মনে
মনে ভাবছিল, অনেক তো হল। এবার
না হয় দেখা করা যাক, মনের ভেতরের
সবটুকু অনুভুতি বলে ফেলা যাক তাকে।
প্রস্তাব পৌঁছল মিষ্টি মেয়ের কাছে-
কিন্তু তার উত্তরটা ছিল অভাবিত। মেয়েটা
বলল- দেখ হিমাদ্রি, আমরা কি শুধু বন্ধু
থাকতে পারি না? এর চেয়ে বেশি কিছুর
আগ্রহ আমার নেই।
হিমাদ্রি প্রথমে আহত হল- তাহলে
এতদিনের সবকিছু কী ছিল! কিন্তু পরে
সে দমে না গিয়ে সিদ্ধান্ত নিল যে
দেখা করবে এবং ওকে বোঝাবে।
হয়তোবা ও ভয় পাচ্ছে, হয়তোবা
অন্য কোন সমস্যা। ফোনে কথা
অবশ্য এর পরেও বন্ধ হয়নি, ফাঁকে
ফাঁকে হিমাদ্রি জেনে নিল কোথায়
থাকা
হয়। কিন্তু কোনভাবেই মেয়েটা আর
আগের মত মিশছে না। হিমাদ্রিও ছাড়ার
পাত্র না। শেষমেশ একদিন মেয়েটা
রাজি হল, বাসার ঠিকানায় আসার জন্য বলল।
হিমাদ্রি যথারীতি সেই কাঙ্খিত দিনের
জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিল এবং সময়মত
গিয়ে হাজির হল তার স্বপ্নের নায়িকার
বাড়িতে।
দরজা খুললেন একজন বয়স্কা ভদ্রমহিলা।
খুলেই প্রশ্নঃ তুমিই হিমাদ্রি? হিমাদ্রি
মনে
মনে ভীষণ খুশি হল, তার সম্পর্কে
তাহলে এই বাড়ির লোকজন জানে।
সে হাসিমুখে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিয়ে
বাড়িতে প্রবেশ করলো।
অপেক্ষা তো আর সইছেনা, ও কখন
আসবে? বসার ঘরেই কি বসিয়ে
রাখবে নাকি? হাতে কিছু নাস্তা নিয়ে ঐ
ভদ্রমহিলা ঢুকলেন ঘরে। হিমাদ্রির
চোখ খোঁজে অন্য
আরেকজনকে। ইনি কী ওর মা?
“তোমার কথা শুনেছি। তোমরা দুজন
অনেক ভালো বন্ধু না?” সে কী!
উনার কণ্ঠটা পুরাই ওর মত। মা মেয়ের
এত মিল! “জ্বি, ও কোথায়?” “তুমি তো
কিছুই খাচ্ছনা দেখি! উত্তেজনার
চোটে কি খাওয়াও বাদ দিলে নাকি?
তোমার প্রিয় পায়েস তো রেঁধেছি!”
হিমাদ্রি কেমন থমকাল, উনি এত কিছু
কিভাবে জানেন? আর ওই বা আসছেনা
কেন? একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
“জ্বি নিচ্ছি, ইয়ে মানে ওকে একটু
ডেকে দিবেন প্লীজ?”
ভদ্রমহিলা কিছুক্ষণ চুপ হয়ে বসে
রইলেন। তারপর আস্তে আস্তে
বললেন, “তুমি কি এখনও কিছু বুঝতে
পারছ না?”
“মানে?” হিমাদ্রি ওনার চোখের দিকে
তাকিয়ে থাকে। চোখের পানি গড়িয়ে
পড়ছে ওনার গালে।
“আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি
হিমাদ্রি, তোমাকে ডেকে আনাটা
আমার ঠিক হয়নি। কিন্তু তুমি যে কিছুতেই
হাল ছাড়ার পাত্র নও!” মহিলার গলায়
অভিমান!
সবকিছু এলোমেলো লাগছে এখন
হিমাদ্রির কাছে। “আপনিই কি……?”
“তাহলে যার নাম নিয়ে কথা বলতেন
সে কে?”
“কেউ না। আমি একা, নিঃসঙ্গ। সবাই
থেকেও আমার কেউ নেই। কথা বলার
ফুরসত কারও নেই আমার সাথে।
তোমার সময় আছে, আমাকে সময়
দিতে, আমি আবার সেই আগের দিন
গুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম!” বলেই
হু হু করে কেঁদে ফেললেন মহিলা।
হিমাদ্রি কি বলবে বুঝতে পারছেনা,
বুকের ভেতরটা মোচড় দিচ্ছে।
কেন আমার সাথে এরকম হল! কেন?!
সিলভি। খুব সহজ সরল একটা মেয়ে,
সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে বসে।
পরিচিত গণ্ডির যেই অনুরোধ জানায়,
তাকেই বন্ধু বানিয়ে ফেলে। একদিন
সে হোম পেজ দেখতে
দেখতে একটা ছবির অ্যালবাম
দেখতে পেল। অ্যাকাউন্টের
মালিককে সে চেনেনা, কিন্তু কেন
জানি ছবিগুলো পরিচিত লাগছে। অ্যালবাম
এ ঢুকেই সে আশ্চর্য- এ ছবিগুলো
তো তারই! অদ্ভুত তো!
“সমস্যা কি আপনার? আপনি আমার অনুমতি
না নিয়ে আমার অ্যালবাম এর ছবি দিব্যি
নিজের অ্যালবামে পোস্ট করে
দিয়েছেন?” এরকম একটা মেসেজ
পাঠাল সেই ছেলেটাকে।
উত্তর এলো, “আপনি এত উত্তেজিত
হচ্ছেন কেন? মানুষ কি অন্য মানুষের
ছবি ব্যবহার করতে পারে না? তারকাদের
ছবি তো সবাই ব্যবহার করে। তাতে কি
কারো আসে যায়?”
সিলভি তো উত্তর পড়ে হতবাক! দুঃখিত
হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো
আমাকেই বোঝাচ্ছে? মানুষের কি
বিবেকবোধ নেই হয়ে যাচ্ছে নাকি?
লোকটাকে রিপোর্ট করল সে।
কয়েকদিন পর অবশ্য ঘটল আরেকটা
ব্যাপার- সেই অ্যালবামের জন্যই কিনা
কে জানে, সুদর্শন প্রোফাইল
পিকধারী এক ছেলে তার বন্ধু হল।
মনে মনে সিলভি অনেক খুশি হল ঠিকই,
কিন্তু ভাব নিল এমন যেন ঐ ছেলের
প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। এর পরও
কয়েকদিন কথা হল। তার সাথে কথা
বলতে সিলভির মন আনচান করত।
এভাবে চলছিল। ফোনেও কথা হতে
লাগল। সিলভি স্বপ্নে ভাবে এমন সুন্দর
একজন জীবনসঙ্গী যদি সারাজীবন
তার সাথে থাকত! ইশ! জীবনটাই ধন্য!
তো একদিন সেই ছেলে তাকে
বলল- আমার আরেকটা অ্যাকাউন্ট
আছে, আমি তোমাকে সেখান
থেকেও রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছি।
সেরকম কোন অ্যাকাউন্ট থেকে
কোন রিকোয়েস্ট সিলভি খুঁজে
পেল না। তবে একই নামে ভিন্ন
প্রোফাইল পিকবিশিষ্ট আরেকজনের
রিকোয়েস্ট দেখল সে।
ছেলেটাকে ব্যাপারটা বলতেই সে যা
বলল তা সিলভির বিশ্বাস করতে কষ্ট
হচ্ছিল। এটাই ঐ “সুদর্শন যুবকের”
আসল চেহারা। আর যার ছবি তার আগের
অ্যাকাউন্টে দেওয়া, সে একজন
বিদেশী মডেল। নিজের বাহ্যিক
সৌন্দর্য দিয়ে মেয়েদের সে
আকৃষ্ট করতে পারত না। তাই এই বিকল্প
ব্যবস্থা গ্রহণ আর কি! সিলভির সাথে কথা
বলে তার মনে হয়েছে যে তাকে
বিশ্বাস করা যায় তাই সে তাকে সত্যি
কথাটা জানিয়েছে।
সিলভি আর কথা বাড়ায় নি। ওখানেই তার
স্বপ্নের ক্ষান্ত দিয়েছে।
আচ্ছা, নিজেকে প্রশ্ন করুন তো,
কেন এসব ঘটনা ঘটছে? ফেসবুক
এমন একটা জিনিস- অন্য প্রায় সবকিছুর
মত যাকে আমি চাইলে গঠনমূলক, ভাল
কাজে ব্যবহার করতে পারি। আবার
চাইলে নেতিবাচক বা খারাপ কাজেও
করতে পারি। এর পেছনে মূল
চালিকাশক্তি হচ্ছে আমার “উদ্দেশ্য”।
ফেসবুকের ইতিবাচক দিক অনেক,
কিন্তু এর কয়েকটা নেতিবাচক দিকের
প্রতিও না তাকালেই নয়। যেমন- কথায়
কথায় মানুষের সমালোচনা করা, অন্য
কারো দোষ খুঁজে বেড়ানো,
অন্যকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলা,
অকারণে কষ্ট দেয়া, সম্মান না করা,
নিজের বড়াই করা, গীবত করা, নিজের
স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে প্রতারণা,
মিথ্যা
কথা বলা, অশ্লীল কথা বলে তাকে
“প্রাপ্তবয়স্কদের কৌতুক” হিসেবে নাম
দেয়া ইত্যাদি দিন দিন কেমন যেন একটা
ফ্যাশন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা হয়ত
অনেকে বুঝতেও পারছিনা যে
এগুলো সাধারণ নৈতিক মূল্যবোধের
পরিপন্থী। এর কোনটার জন্যই
ফেসবুক প্রত্যক্ষভাবে দায়ী নয়,
দায়ী ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য বা
অভিপ্রায়।
চলুন, প্রথমে আমি নিজেকে প্রশ্ন
করি, আমি কি এগুলোর সাথে জড়িত?
আমি কি মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছি? আমার
আচরণে কি অন্য কেউ কষ্ট পাচ্ছে?
{অায়াত:
“মুনাফেক নর-নারী সবারই গতিবিধি
একরকম; শেখায় মন্দ কথা, ভাল কথা
থেকে বারণ করে এবং নিজ মুঠো
বন্ধ করে (কৃপণতা প্রদর্শন করে)।
আল্লাহ্কে ভুলে গেছে তারা,
কাজেই তিনিও তাদের ভুলে
গেছেন…।”(১)}
“তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে
মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বেও
সত্যকে তোমরা গোপন করো
না।”(২)}
দেখুন, আমরা অনেকেই মুসলিম। কিন্তু
মুসলিম নামধারী হয়ে নিজের নামের
কলঙ্ক বাড়াচ্ছি নাতো? আল্লাহ যে
আমাকে সতর্ক করে দিলেন? বারবার
ভুলে যাই। কিন্তু বারবার মনেও তো
করা যায় তাই না? চলুন না আমি আপনি
মিলে
একটু চেষ্টা করি। একদিন দেখব ইন শা
আল্লাহ আমি ঠিকই পারব। আপনিও
পারবেন। শুধু শুধু এই জীবন আর মৃত্যু
পরবর্তী জীবনের বোঝা বাড়িয়ে
লাভ আছে কি?
কেউ হয়ত বলবেন, “আরে ভাই এসব
মুখেই বলা যায়, এত কিছু করতে
গেলে তো জীবনে কিছু করতেই
পারব না। খালি আফসোস করব আর মানুষ
আমাকে বেচে খাবে। আর আমার
জীবনে কি সাধ আহ্লাদ বলে কিছু
নাই?” কিন্তু তাই যদি হয়, তাহলে যখন
কেউ আমার ক্ষতি করে বা আমার নামে
বাজে কথা বলে তখন তাকে কিছু বলার,
এমনকি কষ্ট পাওয়ারও অধিকার আমার
আছে কি? তখন কেন আমার সব
বিবেক বোধ জাগ্রত হয়? কারণ তখন
আমি ভুক্তভোগী, আসামী না। আর
কেন ভাবছেন যে এসব না করলে
জীবনে সুখের স্বাদ পাওয়া যায় না!
এটুকু বলতে পারি যে রাতে আপনি
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন, আর যদি
কিছু নাও পারেন। সুস্থ নৈতিকতা আর
মূল্যবোধের অনির্বচনীয় এক
ধরণের প্রশান্তি আছে। দ্বিতীয়ত,
জীবন সম্পর্কে আমাদের
পরিপ্রেক্ষিত আসলে কিরকম হওয়া
উচিত?
{অায়াত:
“তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন
ক্রীড়াকৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক
অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য
ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক
বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল
কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা
শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে
পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা
খড়কুটো হয়ে যায়। আর পরকালে
আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও
সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার
উপকরণ বৈ কিছু নয়।”(৩)}
আর কিছু বলার প্রয়োজন আছে কি?
আপনি স্বয়ং আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পাচ্ছেন।
কাজেই আপনাকে আহবান জানাই আমার
এই প্রচেষ্টায়। আমি চেষ্টা করছি, আর
আল্লাহর উপর ভরসা রাখছি- কারণ তাঁর
সাহায্য ছাড়া আমি অসহায়। সাড়া দেবেন
কি? অপেক্ষায় রইলাম। মনে রাখবেনঃ
{অায়ত:
“তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং যা
প্রকাশ করে, আপনার পালনকর্তা তা
জানেন।”(৪)}
***
ফুটনোটঃ
১. সূরা আত-তাওবাহ, ৯:৬৭
২. সূরা বাকারাহ, ২:৪২
৩. সূরা হাদীদ, ৫৭:২০
৪. সূরা আল-কাসাস, ২৮:৬৯
Comments
Post a Comment