এটাই বাস্তবতা,,,, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যকে বিবেচনা করা হয় না

,,,এটাই বাস্তবতা,,,,
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একজন
শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যকে বিবেচনা
করা হয় না। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়
কোথাও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বা psycho-
counseling-এর কোনো ব্যবস্থা নেই। একজন
শিক্ষক যখন শিক্ষার্থীর কোনো মেধা বা
আচরণগত সমস্যা দেখেন, তখন তাকে গরু,
গাধা, অপদার্থ, বেকুব, ঘোড়া, ইবলিস বলে
গালি দেন। কখনো বা প্রহার করেন। তবে
বাবা-মা বা স্বজনদের শাসন বা আচরণ যে এ
থেকে ভিন্ন তা কিন্তু নয়। আমাদের শিক্ষা
এতটাই জ্ঞানভিত্তিক যে শিক্ষার্থীর
মানসিক কিংবা শারীরিক স্বাস্থ্যের
দিকে
আমরা নজর দিই না। এ বিষয়ে শিক্ষকদের
মধ্যেও রয়েছে সচেতনতা আর জ্ঞানের
অভাব। অভাব রয়েছে যথোপযুক্ত
প্রশিক্ষণের। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক বা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করার জন্য
নেই কোনো মনোবিজ্ঞানী। তা প্রাথমিক
বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হোক কিংবা
মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় হোক। তা
ছাড়া মানসিক চিকিৎসার জন্য শহর-গঞ্জে
নেই পর্যাপ্ত মনোচিকিৎসক ও
মনোবিজ্ঞানী।
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বা গৃহে সুস্থ
পরিবেশের অপরিহার্যতার বিষয়ে আছে
পারিবারিক অসচেতনতা আর জ্ঞানের
অভাব। সময়ের বিবর্তনে পারিবারিক,
সামাজিক ও আত্মীয়তার বন্ধনগুলো জটিল
হচ্ছে। সহনশীলতা আর সংবেদনশীলতা
কমেছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন বিপদ
লুকিয়ে থাকে। তাই এক সময় বাবা-মা বা
শিক্ষক কাউকে অমানুষ বললে সে অমানুষ
হয়নি। কিন্তু বর্তমান সময়ে কাউকে অমানুষ
বললে সে নিজেকে মূল্যহীন মনে করে
হয়তোবা অমানুষই হওয়ার চেষ্টা করে
কিংবা হতাশায় ভোগে কিংবা
আত্মহত্যা
করে।
সম্প্রতি কুমিল্লা বোর্ডে এইচএসসি ফলাফল
প্রকাশের পর এগারোজন ছাত্রের আত্মহত্যা
এবং একটি ছাত্রের রেখে যাওয়া সুইসাইড
নোট পারিবারিক ভুল সিদ্ধান্ত, হতাশা,
প্রতিবেশীদের কটাক্ষ মানসিক স্বাস্থ্যের
প্রতি অবহেলারই বহিঃপ্রকাশ।
অকৃতকার্যতা
মানে জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয় বা
জীবনকে
শেষ করে দেওয়া নয়। অকৃতকার্যতা কখনো
বা
হতে পারে নতুন জীবনের শুরু। অমাদের
চিন্তাশীলতা আর মনন মানসিকতায় দরকার
আমূল পরিবর্তন। দরকার সহযোগিতা ও
পথপ্রদর্শন।
আশার বিষয় দেশে এখন অটিজম নিয়ে কাজ
ও সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের
বিবেচনায় নিতে হবে বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা,
উদ্বেগ, হতাশা, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস
ডিসঅর্ডার (PTSD), অবসেসিভ কম্পালসিভ
ডিসঅর্ডার (OCD), Attention Deficit
Hyperactivity Disorder (ADD, ADHD), Bipolar
Disorder (Manic Depressive Illness),
Schizophrenia, Borderline Personality Disorder,
Dual diagnosis (Addiction and Mental Illness)
এবং Serious Eating Disorders (anorexia,
bulimia)সহ অন্যান্য মানসিক রোগসমূহকে।
আজ যে শিশুটি চাঁদের হাসি হেসে
পৃথিবীর
বুকে এসেছে তাকে সুস্থভাবে গড়ে
তোলার
দায়িত্ব বাবা-মা, সর্বোপরি পরিবার,
সমাজ
ও রাষ্ট্রের। এ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যখন
কোথাও দৈন্যতা থাকে তখনই সেই চাঁদের
আলোয় হেসে ওঠা শিশুটি জঙ্গিবাদ,
সন্ত্রাসবাদ, মাদক বা নেশার মতো অসুস্থ
জীবন বেছে নেয়। কেউবা হয় পাগল, কেউ বা
অাত্নহত্যা করে, কেউবা বেছে নেয় অসাধু
পথ।
,,
গণতান্ত্রিক
পরিবেশে সবচেয়ে বড় অভিভাবক হলো
রাষ্ট্র। মানসিক স্বাস্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে
একটি রাষ্ট্র কখনো সুস্থ জাতি উপহার দিতে
পারে না। আমাদের অপ্রকাশিত আবেগ,
অনুভূতিগুলো মরে যায় না। আমরা তাদের
জীবিত কবর দিই যা পরবর্তী জীবনে ফিরে
আসে মানসিক রোগ হয়ে। সেবাই হোক
অনুভূতি, মনন, সচেতনতা, শ্রদ্ধা আর প্রকাশের
বাহক। পাগল যেন না হয় কারও পরিচয়।

Comments

Popular posts from this blog

অনার্স ২য় বর্ষে বই লিস্ট উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ,Hon's Botany 2nd year book list

"I LOVE YOU" একটি গাণিতিক সুত্র:

ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলেও, আপনার NID, এনআইডি নম্বর অনলাইন থেকে বের করবেন যে ভাবে, Md Moniruzzaman orfezakir